সেনজেন অধিভুক্ত হলো রোমানিয়া ও বুলগেরিয়া
সেনজেন ভুক্ত দেশ বলতে সেনজেন এলাকা বা সেনজেন জোনের অংশভুক্ত দেশগুলোকে বোঝানো হয়। এটি মূলত একটি ভিসামুক্ত জোন, যা ইউরোপের অধিকাংশ দেশ নিয়ে গঠিত। এই এলাকায় একবার ভিসা বা প্রবেশ অনুমতি পেলে, সেনজেন ভুক্ত সব দেশেই ভ্রমণ করা যায়। সেনজেনের সদস্য দেশগুলোর বেশিরভাগই ইউরোপীয় কিংবা ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্তর্ভূক্ত। সেনজেন, ইউরোপীয় প্রকল্পের অন্যতম প্রধান অর্জন, ১৯৮৫ সালে পাঁচটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশ- ফ্রান্স, জার্মানি, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডস এবং লুক্সেমবার্গ-এর মধ্যে একটি আন্তঃসরকারি প্রকল্প হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এটি ধীরে ধীরে বিশ্বের বৃহত্তম বিনামূল্যে ভ্রমণ এলাকায় পরিণত হয়েছে।
বহুবছর ধরে সেনজেন অধিভুক্ত হওয়ার অভিপ্রায় ছিল পূর্ব ইউরোপের দেশ রোমানিয়া ও বুলগেরিয়ার। দীর্ঘ ১৩ বছর পর তাদের এই অপেক্ষার অবসান ঘটেছে। সেনজেন অধিভুক্ত হলো দেশ দুটি। এ নিয়ে বর্তমানে সেনজেনভুক্ত সদস্য দেশের সংখ্যা দাঁড়ালো ২৯টিতে।
রোমানিয়া এবং বুলগেরিয়া ২০০৭ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউতে) যোগদান করে। কিন্তু চলতি বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত সীমানাবিহীন অঞ্চলে একীভূত হয়নি। বুলগেরিয়া এবং রোমানিয়ার আংশিক অন্তর্ভুক্তির আগে সুইজারল্যান্ড, নরওয়ে, আইসল্যান্ড এবং লিচেনস্টাইনসহ ২৭টি ইইউ সদস্য দেশের মধ্যে ২৩ টি সেনজেনভুক্ত ছিল। প্রতিদিন প্রায় ৩.৫ মিলিয়ন মানুষ এই অভ্যন্তরীণ সীমানা অতিক্রম করে এবং ৪২০ মিলিয়নেরও বেশি লোক সেনজেন এলাকার মধ্যে বাস করে। বেশ কয়েক বছর প্রচেষ্টার পর হাঙ্গেরি সরকারের সহায়তায় সেনজেনের পূর্ণ সদস্যপদ লাভ করেছে দেশ দুটি।
প্রায় এক মিলিয়ন জাতিগত হাঙ্গেরিয়ান রোমানিয়ার ট্রান্সিলভেনিয়া অঞ্চলে বাস করে। তবে শুরু থেকেই দেশদুটির সেনজেনে অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে ভেটো দিচ্ছিল অস্ট্রিয়া। তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল যে, এই দুটি দেশ অভিবাসী বিষয়ে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারছে না। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর হাঙ্গেরির বিভক্তির পর তাদের বেশ কিছু নাগরিক রয়ে যান রোমানিয়ায়। দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক ঐতিহাসিকভাবে পাথুরে ছিল। কিন্তু সীমান্ত খোলার ফলে ভ্রমণ সহজ হবে এবং অঞ্চলগুলোর মধ্যে সম্পর্ক জোরদার হবে বলে আশা করছেন বিশ্লেষকরা।
তবে নেদারল্যান্ডস, অস্ট্রিয়া এবং জার্মানিসহ বেশ কয়েকটি সেনজেন সদস্য দেশ এই বছর অভিবাসনজনিত নিরাপত্তা উদ্বেগের কারণে স্থল সীমান্ত চেক পুনর্বহাল করেছে।