ইসরায়িলের রাজধানির সেনাঘাঁটিতে ড্রোন হামলা
লেবাননের রাজধানী বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলে নতুন করে হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। এরই মধ্যে প্রথমবারের মতো তেল আবিবেরে দক্ষিণে একটি সামরিক ঘাঁটিতে একঝাঁক ড্রোন হামলা চালিয়েছে লেবাননের প্রতিরোধ যোদ্ধা হিজবুল্লাহ।
বৃহস্পতিবার (০৭ নভেম্বর) আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এক বিবৃতিতে হিজবুল্লাহ জানিয়েছে, যোদ্ধারা প্রথমবারের মতো তেল আবিবের দক্ষিণে বিলু ঘাঁটিতে একঝাঁত ড্রোন হামলা চালিয়েছে। তবে এ হামলায় তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতের কোনো তথ্য জানায়নি ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ।
এর আগে, ইসরায়েলের বন্দর নগরী হাইফার কাছে নৌ ঘাঁটি এবং তেল আবিবের কাছে ইসরায়েলের প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে আরেকটি ঘাঁটি লক্ষ্য করে কয়েকটি হামলার দাবি করেছে হিজবুল্লাহ।
ইসরায়েলের বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হামলার কারণে বিমানবন্দরের পরিষেবায় কোনো ধরনের ব্যাঘাত ঘটেনি।
এদিকে লেবাননের রাজধানী বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান। লেবাননের রাজধানীতে থাকা সাংবাদিকরা সেখানে বিকট হামলার শব্দ শোনার কথা জানিয়েছেন। এরপর দক্ষিণ বৈরুতে দুটি বড় ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখা গেছে। লেবাননের আল জাদেদ টেলিভিশন জানিয়েছে, রাজধানীর দক্ষিণাঞ্চলে অন্তত ৪টি হামলা হয়েছে।
বিবিসির এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, সর্বাত্মক যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে মধ্যপ্রাচ্য। গত এক বছরে বিশ্বে অনেক বিপদের মুহূর্ত এসেছে। তবে এবারেরটি সবচেয়ে ভয়াবহ। সম্প্রতি লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর নেতা হাসান নাসরুল্লাহ নিহত হয়েছেন। এরপর লেবাননে স্থল হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। অন্যদিকে ইরান প্রায় ২০০ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করেছে ইসরায়েলে। তেহরানে পাল্টা হামলা চালানোর ঘোষণা দিয়েছে তেলআবিব।
যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা ও আঞ্চলিক শক্তিগুলো উত্তেজনা কমানোর জন্য চাপ দিচ্ছে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ দ্রুত সংঘাত বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে।
শিল্পোন্নত দেশগুলোর জোট জি-৭ এর পক্ষ থেকে সব পক্ষকে ধৈর্য ধরতে বলা হয়েছে; কিন্তু এখন পর্যন্ত সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ। আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে মধ্যপ্রাচ্য সর্বাত্মক যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে চলে এসেছে। গত এক সপ্তাহে ঘটে যাওয়া এসব ঘটনার কারণে মূলত এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরুল্লাহকে হত্যায় লেবাননের বৈরুতে গত ২৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ইসরায়েল বোমা হামলা চালায়। সেখানে ব্যাপক বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। অনেক আবাসিক ভবন ধসে পড়ে। মাটিতে বড় গর্ত সৃষ্টি হয়। আকাশ ধুলাবালি ও ধোঁয়ায় ভরে ওঠে। পুরো লেবানন থেকে ওই দৃশ্য দেখা যায়। এ হামলা হয় মাটির নিচে থাকা হিজবুল্লাহর বাংকার লক্ষ্য করে। এ হামলায় নিহত হন হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরুল্লাহ। ইসরায়েলের এক সপ্তাহ ধরে চালানো হামলায় ৫০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হওয়ার পর নাসরুল্লাহর মৃত্যুর খবর আসে।
তারও এক সপ্তাহ আগে এই সশস্ত্র গোষ্ঠীটিকে লক্ষ্য করে পর পর অসংখ্য ওয়াকি-টকি এবং পেজার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এতে কমপক্ষে ৩২ জন নিহত এবং তিন হাজার জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছিল।