বিআরটি প্রকল্পে কাজ বাকি রেখে চালু হচ্ছে বাস, সুফল নিয়ে শঙ্কা
সড়ক বিভাজক, স্টেশন, পদচারী–সেতু নির্মাণসহ বেশ কিছু কাজ বাকি রেখেই বহুল আলোচিত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পে বাস চলাচল শুরু হচ্ছে। প্রকল্প শুরুর প্রায় এক যুগ পর আসন্ন বিজয় দিবসে আনুষ্ঠানিকভাবে গাজীপুর থেকে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত বিআরটি লেনে বাস চলাচল উদ্বোধনের ঘোষণা দিয়েছে প্রকল্প কর্তৃপক্ষ। এমন অবস্থায় যাত্রীদের মধ্যে প্রকল্পের সুফল পাওয়া নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।
বর্তমানে পরীক্ষামূলকভাবে দুটি এসি বাস দিয়ে গাজীপুরের শিববাড়ী থেকে বিআরটি লেন দিয়ে আবদুল্লাহপুর হয়ে ঢাকার গুলিস্তান পর্যন্ত যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে কাজ শেষ না হওয়ায় পরীক্ষামূলক বাসে চলাচলকারী যাত্রীরা নেতিবাচক অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। প্রকল্পসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বিমানবন্দর থেকে গাজীপুরের জয়দেবপুর পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার প্রকল্পের পুরোপুরি সুফল পেতে আগামী জুন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
প্রকল্পের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০১২ সালের ১ ডিসেম্বর একনেকে বিআরটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। তিন দফা সংশোধনের পর প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ২৬৮ কোটি ৩২ লাখ ৪৩ হাজার টাকা। কয়েক দফা সময় বাড়িয়ে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর কাজ শেষের সময় নির্ধারণ করা হয়েছিল, সেটিও হয়নি। সর্বশেষ বলা হয়েছিল, চলতি বছরের আগস্টে কাজ শেষ হবে। পরে সরকার আবার ডিসেম্বরে উদ্বোধনের কথা জানায়। এর মধ্যে ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থান চলাকালে বিআরটি প্রকল্পে ভাঙচুর হয়। ফলে প্রকল্পের উদ্বোধন নিয়ে একধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হয়।
প্রকল্পসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বিমানবন্দর থেকে গাজীপুরের জয়দেবপুর পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার প্রকল্পের পুরোপুরি সুফল পেতে আগামী জুন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
গত শনিবার দুপুরে প্রকল্প পরিদর্শন শেষে গাজীপুরের শিববাড়ী বিআরটি স্টেশনে এক সভায় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. এহছানুল হক উদ্বোধনের বিষয়টি জানান। সড়কটি চালু হলেও বেশ কিছু সমস্যা থেকে যাবে, যার সমাধান এক দিনেই হবে না উল্লেখ করে ওই দিন তিনি আরও বলেন, ‘এখন পর্যন্ত প্রকল্পের ৯৮ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি কাজ বাস চলাচলের মধ্যেও চলমান থাকবে। আশা করছি, আগামী বছরের জুনে এই প্রকল্প পুরোপুরি ফাংশনাল (কার্যকর) করা সম্ভব হবে।’
আমরা অনেক আশা করে আছি ঢাকার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বা মেট্রোরেলের মতো ভালো একটা কিছু হবে। কিন্তু এক যুগ ধরে আমরা প্রকল্পের কারণে দুর্ভোগের মধ্যেই আছি। এখনো সুফল পাওয়া নিয়ে আমাদের মধ্যে শঙ্কা রয়েছে।