ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’: উপকূলীয় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল
ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র কারণে সাতক্ষীরার উপকূলীয় উপজেলা শ্যামনগর ও আশাশুনির সরকারি কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল করেছে জেলা প্রশাসক। এদিকে, ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ যত উপকূল নিকটবর্তী হচ্ছে তত সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
বুধবার (২৩ আগস্ট) সকাল থেকেই ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র প্রভাবে অবিরাম বৃষ্টি আর ঝড়ো হাওয়া শুরু হয়ে গেছে। মানুষের মধ্যে রয়েছে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা। দূর্যোগ প্রবণ সাতক্ষীরার সাধারণ মানুষের জন্য ঝড় জলোচ্ছাস যেন পিছু ছাড়ছে না। গত ২৬ মে হানা দিয়েছিলো রিমাল, সেই রিমালের হাত ধরেই সাতক্ষীরা উপকূলেই চলে এলো ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’। এই অবস্থা যত নিকটবর্তী হচ্ছে তত বেশি ঝড়ো বাতাস ও বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র প্রভাব মোকাবিলায় উপকূলবাসীকে আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসক মো. মোস্তাক আহমেদ জানান, শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলার দুর্বল বেড়িবাঁধ নিকটবর্তী মানুষদের জন্য প্রস্তত রাখা হয়েছে আশ্রয় কেন্দ্র। সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাতক্ষীরার উপকূলীয় উপজেলা শ্যামনগর ও আশাশুনির সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। একই সঙ্গে জেলার দুর্যোগ ব্যাবস্থাপনা সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদেরও ছুটি বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া ৮৮৭টি সাইক্লোন শেল্টার ও আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তত রাখা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, সাতক্ষীরায় রয়েছে বিগত শতাব্দীর ষাটের দশকে নির্মিত উপকূলীয় বেড়িবাঁধ। যার সবটাই অনিরাপদ। তবে এ মুহূর্তে শ্যামনগর ও আশাশুনির ১৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ জরাজীর্ণ ও অধিক ঝুঁকিপূর্ণ।
সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী রিপন জানান, ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ উপকূল থেকে ৬০০ কিলোমিটার নিকটবর্তী হয়ে পড়েছে। ঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার।
এর আগে বুধবার সকাল ৬টায় ঘূর্ণিঝড়টি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে অবস্থান করছিল।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, বর্তমানে ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ঘণ্টায় ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই সঙ্গে ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।
এই অবস্থায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে বলা হয়েছে।