বাংলাদেশ ব্যাংকের মুনাফা বেড়ে সাড়ে ২২ হাজার কোটি টাকা- অর্থনীতির মন্দার মধ্যেও রেকর্ড মুনাফা

২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুনাফা বেড়ে দাঁড়িয়েছে সাড়ে ২২ হাজার কোটি টাকায়। সরকারের কাছে টাকা ধার দেওয়া, ব্যাংকগুলোকে ঋণ দেওয়া ও ডলারের বিনিময় হার বৃদ্ধির কারণে এই বিপুল মুনাফা এসেছে।
আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের আর্থিক হিসাব অনুমোদন করা হয়। গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় জানানো হয়, গত অর্থবছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক মোট ৩৩ হাজার কোটি টাকা মুনাফা করেছে। এর মধ্যে নিট বা প্রকৃত মুনাফা হয়েছে ২২ হাজার ৬০০ কোটি টাকা।
সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের মূল বেতনের ছয় গুণ প্রণোদনা বোনাস অনুমোদন দেওয়া হয়।
কেন বেড়েছে মুনাফা?
অর্থনীতিতে মন্দাভাব বিরাজ করলেও বাংলাদেশ ব্যাংকের ঋণ কার্যক্রম ছিল সক্রিয়।
সরকারের ধার নেওয়া বৃদ্ধি : রাজস্ব আয় কম থাকায় সরকার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা ধার নিয়েছে।
ব্যাংকগুলোর ধার নেওয়া বৃদ্ধি : বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোও কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে আগের তুলনায় বেশি টাকা ধার করেছে।
সুদ আয় বৃদ্ধি : এর ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুদ আয় বেড়েছে।
রিজার্ভ বিনিয়োগের মুনাফা : বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিনিয়োগ থাকায় সেখান থেকেও ভালো মুনাফা এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা ইতিমধ্যেই সরকারের হিসাবে জমা দেওয়া হয়েছে। বাকি অর্থও এই সপ্তাহের মধ্যেই সরকারের হিসাবে জমা করা হবে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিট মুনাফা ছিল প্রায় ১৫ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে সেই মুনাফা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২ হাজার ৬০০ কোটি টাকায়। অর্থাৎ মাত্র এক বছরে নিট মুনাফা বেড়েছে প্রায় ৭ হাজার ৩০০ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, সাধারণত অর্থনীতি চাঙা থাকলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুনাফা কম হয়। আর অর্থনৈতিক মন্দার সময় সরকার ও ব্যাংকগুলোর ধার নেওয়া বেড়ে যায়, ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুনাফাও বেশি হয়। বিশ্বের অনেক দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ক্ষেত্রেও একই চিত্র দেখা যায়।
ডেপুটি গভর্নর হাবিবুর রহমান জানান, এবার রিজার্ভের বিনিয়োগের চেয়ে স্থানীয় মুদ্রা থেকে বেশি মুনাফা এসেছে। ইতিমধ্যেই মুনাফার বড় একটি অংশ সরকারের হিসাবে জমা দেওয়া হয়েছে, বাকিটুকুও দ্রুত জমা দেওয়া হবে।