উচ্ছেদ অভিযানে ইউএনও’র গাড়ি ভাঙচুর, এসিল্যান্ড আহত

গাজীপুরের শ্রীপুরে বন বিভাগের দখল করা জমি উদ্ধারের অভিযানে হামলা চালিয়েছে দখলকারীরা। হামলায় এসিল্যান্ডসহ অন্তত ৬ জন আহত হয়েছেন। এ সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের গাগিসহ তিনটি গাড়ি ও দুইটি এক্সেকেভেটর ভাঙচুর করা হয়। মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) বেলা ৩টার দিকে উপজেলার ইজ্জতপুর এলাকায় অভিযান চলাকালে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন শ্রীপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) আতাহার শাকিল, ইউএনও’র গাড়ি চালক আব্দুল হানিফ, স্টাফ আশিকুর রহমান, রাজেন্দ্রপুর রেঞ্জ কর্মকর্তার গাড়ি চালক লিটন, এস্কেভেটর অপারেটর মো. রাসেল ও হাকিমুল্লাহ্। এ ঘটনায় দুই হামলাকারীকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবে তাদের নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি।
উপজেলা প্রশাসন, বন বিভাগ ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, শ্রীপুর উপজেলার ৪৯ নং কাফিলতলী মৌজার বনের জমি দীর্ঘদিন ধরে জবর দখল হয়ে আসছে। গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর শ্রীপুরে ব্যাপক হারে বনের জমি দখল হয়। গত কয়েকদিন ধরে বন বিভাগের জায়গাতে গড়ে তোলা ওইসব অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নিতে এলাকায় মাইকিং করা হয়। এতে অবৈধ দখলদাররা বন বিভাগের জায়গা থেকে স্থাপনা সরিয়ে নিয়ে যায়নি।

মঙ্গলবার গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার রাজাবাড়ী ইউনিয়নের ইজ্জতপুর এলাকায় সকাল থেকে সেনাবাহিনী, র‌্যাব, পুলিশ, আনসার, বনকর্মী ও উপজেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে বন বিভাগ। অভিযানে ওই এলাকার কয়েক একর বনভূমি উদ্ধার ও বনের জায়গাতে গড়ে তোলা শতাধিক স্থাপনা এস্কেভেটর মেশিনের (ভেকু) সাহায্যে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। বিকেল ৩টায় অভিযান শেষে ফেরার পথে হঠাৎই স্থানীয় বনের জায়গা দখলকারীরা একত্রিত হয়ে উপজেলা প্রশাসনের লোকজনের ওপর হামলা চালায়। এ সময় হামলাকারীদের ছোঁড়া ইটের আঘাতে কমপক্ষে ৬ জন আহত হন।
ঢাকা বন বিভাগের সরকারী বন সংরক্ষণ (এসিএফ) মো. শামসুল আরেফিন জানান, বন আইনের ৬৬ ধারায় কাফিলাতলী গ্রাম এবং ইজ্জতপুর বাজারে বন বিভাগের জায়গাতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে যৌথ বাহিনীর অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযান শেষে ফেরার পথে বনের জায়গা জবরদখলকারীরা পেছন থেকে হামলা চালায়। হামলাকারীরা তিনটি গাড়ি ও দুটি এক্সেকেভেটর ভাঙচুর করে।

শ্রীপুর সহকারী কমিশনার (ভূমি) আতাহার শাকিল বলেন, একটি জমির মালিকানা নিয়ে রেল ও বনবিভাগের সম্পৃক্ততা নিয়ে স্থানীয়রা অভিযোগ জানায়। এ সময় ওই জমির অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ বন্ধ করে ফেলার পথে অতর্কিত ভাবে ওই জায়গার দোকান ও বসত ঘরের মালিকরা পাশের রেললাইন থেকে পাথর ও ইট নিয়ে হামলা করে। তারা ইউএনওর গাড়ি ও তার গাড়িতে ঢিল ছোঁড়ে। এতে এস্কেভেটর মেশিনের দুই চালককে মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন।

শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ব্যারিস্টার সজিব আহমেদ বলেন, ‘হামলায় সম্পৃক্ত কয়েকজন নাম আমরা পেয়েছি। এদের মধ্যে সিরাজুল, তার ছেলে মাসুদসহ কয়েকজনের নাম পাওয়া গেছে। বাকিদেরও পরিচয় শনাক্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে বন বিভাগ বন আইনে মামলা করবে। হামলার ঘটনায়ও মামলা করা হবে।’

আরও পড়ুন: