কুয়াকাটায় ৩ দিনব্যাপী রাস উৎসব শুরু
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ২০০ বছর ধরে চলে আসা রাস উৎসব শুরু হচ্ছে
প্রতি বছরের মতো এ বছরও পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ঐতিহ্যবাহী রাস লীলা বা রাস উৎসব।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ২০০ বছর ধরে চলে আসা রাস উৎসব শুরু হচ্ছে। তবে পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে আগামীকাল শুক্রবার।
কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ রিজিয়নের সহকারী পুলিশ সুপার মো. হাবীবুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এরই মধ্যে সকল ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে আয়োজক কমিটি। সুষ্ঠু ও শান্তিভাবে রাস উৎসব সম্পন্ন করার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কারিগরদের রংতুলির নিপুণ ছোঁয়ায় সাজিয়ে তোলা হচ্ছে ১৮ জোড়া যুগল প্রতিমা। সবকিছু সাজানো হচ্ছে নতুন সাজে। দুদিন আগ থেকেই দেশের নানা প্রান্ত থেকে ভাসমান ব্যবসায়ীরা এসে মেলায় অংশগ্রহণ করছে।
পঞ্জিকা মতে, শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সকাল ৫টা ৪৩ মিনিট থেকে শুরু হবে পূর্ণিমা, থাকবে শনিবার (১৬ নভেম্বর) সকাল ৩টা ৩২মিনিট পর্যন্ত। তাই প্রতিবছরের মতো এবারও পূর্ণিমার এ তিথিতে কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা পাপ মোচন ও পুণ্যলাভের আশায় পূর্ণিমা তিথিতে সনাতন ধর্মাবলম্বী নারী-পুরুষ কুয়াকাটায় সমুদ্রে পুণ্যস্নান করবেন।
কুয়াকাটা রাসপূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী নিহার রঞ্জন মন্ডল বলেন, এ বছরও পূর্ণিমা তিথিতে হাজারো তীর্থ যাত্রীদের পদভারে মুখরিত হবে সমুদ্রসৈকত কুয়াকাটা।
তিনি আরও বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যায় পূজার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর রাতভর চলবে নামকীর্তন, ভাগবত পাঠ ও আরতি। শ্রীকৃষ্ণের লীলা কীর্তনে অংশগ্রহণ করবেন ভারতের কবিতা ঘোষ। শনিবার সূর্যোদয়ের আগেই রাস পূর্ণিমা লগ্ন অনুযায়ী সাগর সৈকত কুয়াকাটায় পাপ মোচনের লাভের আশায় নামবে ভক্তদের ঢল। একই দিন সৈকতে অনেকেই পুরোহিত এনে ভিন্ন ভিন্ন মানত করে পূজা দিবেন। নানা ধর্ম-বর্ণের মানুষও মিলিত হবে রাসপূজা ও সমুদ্র স্নানানুষ্ঠানে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শত বছর ধরে চলে আসা রাস পূর্ণিমা পূজা ও পুণ্যস্নান উপলক্ষ্যে আমরা ধারণা করছি, তিন লাখ লোকের সমাগম হবে। কুয়াকাটায় পুণ্যস্নানে আগত পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জেলা, উপজেলা ও পৌর প্রশাসনের সমন্বয়ে একটি নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, সার্বক্ষণিক থানা পুলিশ, সেনাবাহিনী, ট্যুরিস্ট পুলিশ এবং গ্রাম পুলিশসহ প্রায় পাঁচ শতাধিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরাপত্তার জন্য কাজ করবেন।