মেঘনা বাংলাদেশের ব্যতিক্রমী ঈদ উৎসব উপহার

মেঘনা বাংলাদেশ বোনাসের সাথে সকল কর্মকর্তা কে গরুর মাংস উপহার

প্রতি বছরই ঈদের সময় মেঘনা বাংলাদেশ তার বিশেষ ঈদ উপহার বিতরণের মাধ্যমে কর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে থাকে। মেঘনা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা মিজানুর রহমান ভুঁইয়া, যিনি নিজের খামারের গরু ঈদের আগে জবাই করেন, তা কর্মীদের মধ্যে ঈদের খাদ্যপণ্যসহ ভাগ করে দেন। এই প্রথা অনুযায়ী, এবারও প্রতিষ্ঠানটি তার কর্মীদের মাঝে গরুর মাংস বিতরণ করেছে, যা দেশের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানটির এক বিশেষ উদ্যোগ হিসেবে পরিচিত।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মেঘনা গ্রুপ প্রতি বছর ঈদ উপলক্ষে কর্মীদের জন্য বিভিন্ন খাদ্যপণ্য উপহার দিয়ে থাকে, যার মধ্যে রয়েছে গুড়া দুধ, চিনি, পোলাও চাল, তেল, ঘি, সেমাইসহ আরও অনেক কিছু। ২০২৫ সালের ঈদেও, যেমনটি পূর্বে ছিল, এবারও এই উপহার প্যাকেজ কর্মীদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে, যা তাদের আনন্দিত ও কৃতজ্ঞ করেছে।

এই বছরেও ঈদ উপহার বিতরণের তত্ত্বাবধানে ছিলেন মেঘনা গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (C.E.O), জনাব লুৎফুল বারী। তাঁর সঞ্চালনায়, মেঘনা গ্রুপের জ্যেষ্ঠ মহাব্যবস্থাপক- বিপণন, জনাব মোস্তাফিজুর রহমান, এবং মহাব্যবস্থাপকদ্বয়, জনাব আবু সায়েম ও ইস্রাফিল হোসেন সাজু, এবং খান শামিম আহম্মেদ, মহাব্যবস্থাপক, একাউন্ট ও ফিন্যান্স (মেটাল ডিপার্টমেন্ট), একযোগে এই কার্যক্রমে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। পুরো আয়োজনের সফল বাস্তবায়নে এবং তত্ত্বাবধানে ছিলেন উপমহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া, নিরাপত্তা বিভাগের প্রধান, যাঁর কঠোর মনোযোগ ও নিষ্ঠা এই মহতী উদ্যোগকে সমৃদ্ধ করেছে।

মেঘনা গ্রুপের যাত্রা শুরু হয় ১৯৬৫ সালে, এবং এর প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশে শিল্পক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। ২০২০ সালের করোনাকালীন সময়ে মেঘনা গ্রুপের সাফল্য দেশ-বিদেশে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। এক বিশেষ উদ্যোগ হিসেবে, শুধুমাত্র সাইকেল ব্যবহার করে মেঘনা গ্রুপ বাংলাদেশের রপ্তানি বাজারে ইউরোপে সফলতা অর্জন করে। রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশে মেঘনা গ্রুপ একাধিক বিভাগে স্বর্ণ, রৌপ্য ও অন্যান্য মেডেল অর্জন করেছে, যা প্রতিষ্ঠানটির আন্তর্জাতিক সাফল্যের একটি বড় পরিচায়ক।

মেঘনা গ্রুপের কর্ণধার, মিজানুর রহমান বাবু, তার বিনয়, ধীরস্থির মনোভাব, উদার মানসিকতা এবং ধর্মভীরুতার জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। মেঘনা গ্রুপের এই প্রতিষ্ঠাতা তার কর্মীদের জন্য একটি বিশেষ উদ্যোগ নিয়ে কাজ করেন, যেখানে নির্দিষ্ট সময় ও বয়স অনুযায়ী ক্রম অনুসারে তাদেরকে ওমরা এবং হজ্জ পালনের সুযোগ দেওয়া হয়। এছাড়া, মিজানুর রহমান বাবু প্রতিবারই বার্ষিক পুরস্কারের অংশ হিসেবে তার ব্যবসায়িক সহযোগী ও ডিলারদের জন্য অন্য দেশগুলোর তুলনায় অধিক আগ্রহের সাথে ওমরা ও হজ্জ সফরের ব্যবস্থা করেন।

অনেকেই মেঘনা গ্রুপের স্বত্বাধিকারি মিজানুর রহমান ভুঁইয়া এবং তার বড় সন্তান মাহিন ভুঁইয়ার কল্যাণ কামনা করেন, পাশাপাশি এই পরিবারের সকল সদস্যের দীর্ঘায়ু প্রার্থনা করেন। ঈদ বোনাসের সময় মিজানুর রহমান ভুঁইয়া তার ফ্রন্টলাইনের নায়কদের সঙ্গে আনন্দ ভাগ করে নিচ্ছেন, যা তাঁর ব্যবস্থাপনা এবং কর্মীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার চিহ্ন।

মিজানুর রহমান ভুঁইয়া যাকাত ফান্ড থেকে অনেক কর্মচারীকে বিপুল পরিমাণ টাকা সাহায্য করে তাদের জীবনযাত্রা স্থিতিশীল করে দিয়েছেন, যা পুরোপুরি আসল যাকাতের নিয়ম মেনে করা হয়েছে। উৎফুল্ল কর্মকর্তাদের অনেকেই নিজেরা জানাতে বাধ্য হয়েছেন যে, তাদের স্বত্বাধিকারি কর্মকর্তা নয়, বরং মিজানুর রহমান ভুঁইয়া প্রথমে কর্মচারীদের বেতনভাতা বৃদ্ধি করে তাদের প্রতি তাঁর সহানুভূতির প্রমাণ রেখেছেন।

মেঘনা গ্রুপ বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় এবং বৃহত্তম শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে একটি। এ গ্রুপের অধীনে রয়েছে নানা ধরনের সেক্টর, যেমন অটোমোবাইল, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং (বাইসাইকেল), প্যাকেজিং, মেলামাইন, টেক্সটাইল এবং আরও অনেক। মেঘনা গ্রুপটি প্রতিষ্ঠা করেন বাংলাদেশের সফল উদ্যোক্তা আব্দুল খালেক ভূঁইয়া ১৯৬৫ সালে। পরবর্তীতে তার দক্ষ সন্তান, জনাব মিজানুর রহমান ভূঁইয়া, গ্রুপের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন এবং তাঁর প্রতিভাবান পরিচালনায় প্রতিষ্ঠানটি দেশের শীর্ষস্থানীয় গ্রুপ কোম্পানিতে পরিণত হয়।

মেঘনা গ্রুপ শুধুমাত্র বাংলাদেশে নয়, আন্তর্জাতিক বাজারেও একটি শক্তিশালী উপস্থিতি প্রতিষ্ঠিত করেছে। এটি দেশের সর্ববৃহৎ সাইকেল প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত, এবং শুধু বাংলাদেশেই নয়, জার্মানি, যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের একাধিক দেশে এর সাইকেল রপ্তানি করা হয়। মেঘনা গ্রুপ বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় পোশাক প্রস্তুতকারকদের মধ্যে একটি, যা ইউরোপের উচ্চমানের ফ্যাশন ব্র্যান্ডগুলির জন্য একচেটিয়া রপ্তানি করে থাকে। প্রতিষ্ঠানটির দক্ষতা এবং উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনা বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের মান এবং সাফল্যের এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

সংকলনেঃ রাশেদ রনি

আরও পড়ুন: