লেবাননের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত ইসরায়েল

লেবাননে অব্যাহতভাবে হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। দেশটির এ হামলায় একের পর এক প্রাণ হারাচ্ছে বেসামরিক লোকজন। ফলে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে এবার এ চুক্তিতে নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছে ইসরায়েল।

রোববার (২৪ নভেম্বর) টাইমস অব ইসরায়েলের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লেবাননের প্রতিরোধ যোদ্ধা হিজবুল্লাহর সঙ্গে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছেন। মার্কিন প্রণীত এ যুদ্ধবিরতি কিভাবে জনগণের সামনে উপস্থাপন করা হবে তা নিয়ে তিনি কাজ শুরু করেছেন। রোববার রাতে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে, উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের পর নেতানিয়াহু এ প্রস্তাবে রাজি হয়েছেন।

ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের বরাতে দেশটির সংবাদমাধ্যম কান ও ওয়াইনেট ও হারেটজ জানিয়েছে, ওয়াশিংটন এবং বৈরুত উল্লেখ করেছে যে প্রস্তাবটির অনুমোদন চূড়ান্ত করা হয়নি। কিছু বিষয়ে এখনও পরিমার্জন করার সুযোগ রয়েছে। জেরুজালেম প্রস্তাবনাটি নীতিগতভাবে অনুমোদন করেছে। মূল নীতিগুলোকে অনুমোদন করেছে। সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট জানিয়েছে, বিষয়টি লেবাননকে জানানো হয়েছে।

এর আগে গত সপ্তাহে হিজবুল্লাহর প্রধান নাইম কাসেম বলেন, তারা যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পর্যালোচনা করেছে এবং এর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। বল এখন ইসরায়েলের কোর্টে রয়েছে।

বিবিসির এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, সর্বাত্মক যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে মধ্যপ্রাচ্য। গত এক বছরে বিশ্বে অনেক বিপদের মুহূর্ত এসেছে। তবে এবারেরটি সবচেয়ে ভয়াবহ। সম্প্রতি লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর নেতা হাসান নাসরুল্লাহ নিহত হয়েছেন। এরপর লেবাননে স্থল হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। অন্যদিকে ইরান প্রায় ২০০ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করেছে ইসরায়েলে। তেহরানে পাল্টা হামলা চালানোর ঘোষণা দিয়েছে তেলআবিব।

যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা ও আঞ্চলিক শক্তিগুলো উত্তেজনা কমানোর জন্য চাপ দিচ্ছে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ দ্রুত সংঘাত বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে।

শিল্পোন্নত দেশগুলোর জোট জি-৭ এর পক্ষ থেকে সব পক্ষকে ধৈর্য ধরতে বলা হয়েছে; কিন্তু এখন পর্যন্ত সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ। আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে মধ্যপ্রাচ্য সর্বাত্মক যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে চলে এসেছে। গত এক সপ্তাহে ঘটে যাওয়া এসব ঘটনার কারণে মূলত এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরুল্লাহকে হত্যায় লেবাননের বৈরুতে গত ২৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ইসরায়েল বোমা হামলা চালায়। সেখানে ব্যাপক বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। অনেক আবাসিক ভবন ধসে পড়ে। মাটিতে বড় গর্ত সৃষ্টি হয়। আকাশ ধুলাবালি ও ধোঁয়ায় ভরে ওঠে। পুরো লেবানন থেকে ওই দৃশ্য দেখা যায়। এ হামলা হয় মাটির নিচে থাকা হিজবুল্লাহর বাংকার লক্ষ্য করে। এ হামলায় নিহত হন হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরুল্লাহ। ইসরায়েলের এক সপ্তাহ ধরে চালানো হামলায় ৫০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হওয়ার পর নাসরুল্লাহর মৃত্যুর খবর আসে।

তারও এক সপ্তাহ আগে এই সশস্ত্র গোষ্ঠীটিকে লক্ষ্য করে পর পর অসংখ্য ওয়াকিটকি এবং পেজার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এতে কমপক্ষে ৩২ জন নিহত এবং তিন হাজার জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছিল।

সংকলিত_এম-আর-আর

আরও পড়ুন: