নাট্যনির্দেশক দীপন সুমনেকে হামলার প্রতিবাদে শিল্পী-সংস্কৃতিকর্মী-নাগরিক

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সংগ্রামী সংস্কৃতিযোদ্ধা এবং নাট্য নির্দেশক দীপক সুমন ও তাঁর পরিবারের উপর হামলার প্রতিবাদে শিল্পী-সংস্কৃতিকর্মী-নাগরিকের আয়োজনে একটি প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

সভায় বাংলাদেশ উদীচি শিল্পীগোষ্ঠী, কেন্দ্রীয় সংসদের সহ সভাপতি জামশেদ আনোয়ার তপনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সমাজ অনুশীল কেন্দ্রের সংগঠক  অভিজিৎ গুহ, সংগীতশিল্পী ফারজানা ওয়াহেদ সায়ান, একটিভিস্ট বাকি বিল্লাহ, বাংলাদেশ উদীচি শিল্পীগোষ্ঠী সহ সম্পাদক ইকবাল উল হক খান, শ্রমিক নেতা ইকবাল কবীর, কৃষক নেত্রী তাহেরা বেগম জলি, বিবর্তন সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান লাল্টু এবং সাংগঠনিক সম্পাদক আমীরুন নূজহাত মনীষা, সমাজ চিন্তা ফোরামের আহবায়ক কামাল হোসেন বাদল, চিকিৎসক ড: হারুন উর রশীদ এবং স্বয়ং দীপক সুমন।

সভায় বক্তারা দীপক সুমন এবং তাঁর পরিবারের উপর সন্ত্রাসী হামলার বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জানান এবং এর সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। তাঁরা বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে ধর্মীয় ও জাতিগত দুর্বল জনগোষ্ঠীর উপর যে ধরণের নিপীড়ন নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে তা গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা ও চেতনার পরিপন্থী৷ আমরা দেখতে পাচ্ছি এই নব্য ফ্যাসিবাদী ধারা একই সাথে বিভিন্ন ধর্মীয় স্থাপনা, পাহাড়ি জাতিসত্তার মানুষ এবং সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপতৎপরতা চালাচ্ছে যা পতিত ফ্যাসিবাদী সরকারই প্রতিচ্ছবি।  এই ধরণের অপতৎপরতা  অবিলম্বে বন্ধ করে ভয়হীন মুক্ত সাংস্কৃতিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।   ধর্মীয় সংখ্যালঘু ও বিভিন্ন  জাতিসত্তার  মানুষকে নিরাপত্তা প্রদান করতে হবে”।

সমাবেশে নাট্য নির্দেশক দীপক সুমন তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী হামলার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। তিনি জানান বিগত বছরগুলোতে আওয়ামীলীগের বিভিন্ন কার্যক্রমে সক্রিয় থাকা একজন কলেজ প্রভাষক এবং বিএনপির রাজনীতির সাথে যুক্ত  ফ্যাসিবাদী শাসনামলে নির্বাচিত স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরের নেতৃত্বে তাঁর এবং তাঁর পরিবারের উপর হামলা চালানো হয়। পাশাপাশি তাঁকে শারীরিক ভাবে লাঞ্চনা করা হয়।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখালেখির ফলে বিএনপির উচ্চতর কর্তৃপক্ষ এবং পরবর্তীতে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতা পেলেও তিনি আশ্বস্ত হতে পারছেন না। তিনি মনে করছেন এই ধরণের ঘটনা তাঁর সাথে পুনরায় ঘটতে পারে। শুধু তাই না তিনি মনে করেন, তাঁর সামাজিক পরিচয়ের কারণে  কিছু দ্রুত সমাধান পেলেও বাংলাদেশের আনাচেকানাচে এমন অনেক ঘটনা ঘটছে যা মিডিয়ায় আসছে না এবং মানুষ সমাধান  পাচ্ছেনা। এ ধরণের ঘটনা মূলত ফ্যাসিবাদ সংস্কৃতিকেই জিইয়ে রাখছে। তিনি গণঅভ্যুত্থানের চেতনা সংরক্ষণ করতে এই ধরণের নিপীড়নের বিরুদ্ধে জনগণকে শক্ত অবস্থান নেওয়ার আহবান জানান।

আরও পড়ুন: