প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে মানববন্ধন : শিক্ষকের পদত্যাগ

নোয়াখালী সদর উপজেলার মৃধার হাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হীরম্ময় ভৌমিক এর দূর্নীতির প্রতিবাদে ও পদত্যাগের দাবীতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার (৭ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে নোয়াখালী সদর উপজেলার অশ্বদিয়া ইউনিয়নের ৬নম্বর ওয়ার্ড়ের অলিপুর গ্রামের মৃধার হাট উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে ভুক্তভোগী বর্তমান ও প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবকবৃন্দ এবং এলাকার সচেতন মহলের ব্যানারে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় ভুক্তভোগী ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকরা দূর্নীতিবাজ তাড়াও স্কুল বাঁচাও,এই স্লোগানে প্রধান শিক্ষক হীরম্ময় ভৌমিক কৃর্তিক বিদ্যালয়ের নানা অপকর্ম ও কুকীর্তি তুলে ধরে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। দূর্নীতিবাজ, ঘুষখোর, সেচ্ছাচারী ও অযোগ্য শিক্ষক হীরম্ময় ভৌমিক এর পদত্যাগের দাবীতে চেয়ে স্লোগান দেয় তারা। স্লোগানে- স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে স্কুল সহ পুরো এলাকা।

ছাত্র-ছাত্রীরা বলেন, প্রধান শিক্ষক বিগত প্রায় দশ বছর যাবত স্কুলের এবং আমাদের ছাত্র-ছাত্রীদের কোন উন্নয়ন না করে সুধু নিজের পকেট ভারি করেছেন। তিনি বিদ্যালয়ে অর্থনৈতিক দুর্নীতি ও লুটপাট করেছেন।

ছাত্ররা বলেন, এস,এস,সি পরীক্ষার সময় কোচিং এবং মেধা তালিকায় উর্ত্তীণ না হওয়ার কারণ দেখিয়ে লাখ-লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। আইডি কার্ড দেওয়ার কথা বলে টাকা নিয়েও আইডিকার্ড দেননি।

এসময় ছাত্রীরা বলেন, আমাদের এখানে ব্যবহার উপযোগী ওয়াশ রুম নেই। এতে পিরিয়ড়ের সময় আমাদেরকে বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হয়। এছাড়া স্কুলের কোন টিউবয়েল নেই, আমরা প্রাইমারী স্কুলের টিউবয়েল থেকে পানি এনে পান করতে হয়। নেই বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা। এই আধুনিক যুগে আমাদেরকে এই স্কুলে এসে মানবেতর জীবন-যাপন করতে হচ্ছে। আমরা বিগত দিনে এটার প্রতিবাদ করতে গেলেও তিনি পুলিশ ও সাবেক এমপির ভয় দেখাতেন এবং হয়রানি করতেন। তাই দ্রুত এই অযোগ্য প্রধান শিক্ষক হীরম্ময় ভৌমিক এর বিচার ও বহিষ্কারের দাবি করছি।

ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সদস্য ডাঃ সবুজ বলেন, প্রধান শিক্ষক হীরম্ময় ভৌমিক রিসিট দিয়ে হাজার-হাজার নিয়েছেন, কিন্তু কি বাবত টাকা নিয়েছেন তা উল্লেখ করেননি। উনাকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি আমাকে দশ হাজার টাকা নিতে বলেন, কিন্তু আমি নেইনি।

ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি আলা উদ্দিন বলেন, প্রধান শিক্ষক একজন সহকারী শিক্ষক নিয়োগের সময় সাত লাখ টাকা নিয়েছেন। তিনজন পিয়ন নিয়োগের সময় জনপ্রতি তিন লাখ টাকা করে নিয়েছেন। এছাড়া ঠিকাদারদের কাছে স্কুলের মাঠ ভাড়া দিয়ে তিন লাখ টাকা নিয়ে স্কুলের মাঠ ধ্বংস করে দিয়েছেন। এখন ছাত্র-ছাত্রীরা মাঠে খেলাধুলা করতে পারছেনা।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, অভিভাবক মিজানু রহমান গাদ্দাফি,গোলাপ মাওলা,সেলিম,ফুয়াদ,রিয়াদ,সাব্বির, ফয়সাল,পারভেজ,সুজন,মনির,সহেল,আনোয়ার,হাসান, জিহান,রুবেল ও রাহাত এবং বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী সহ আরো অনেকে।

প্রধান শিক্ষক হীরম্ময় ভৌমিক বলেন, সব অভিযোগ সত্য নয়। তিনি বলেন, যার থেকে যত টাকা নেওয়া হয়েছে সব রিসিট এর মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে। স্কুলে ছেলে ও মেয়েদের জন্য আলাদা-আলাদা ওয়াশ রুম আছে।

সকাল থেকে বিদ্যালয়ের বর্তমান ও প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক এবং এলাকার সচেতন মহলের প্রতিবাদ চলমান অবস্থায় বেলা তিন টার দিকে প্রধান শিক্ষক হীরম্ময় ভৌমিক সেচ্ছায় পদত্যাগ করেন। এ সময় তিনি বলেন, প্রিয় ছাত্র-ছাত্রীবৃন্দ তোমরা আমার কাছে পদত্যাগ চেয়েছো আমি পদত্যাগ করেছি। আমার এতে কোন ব্যাথা নেই। তোমাদের প্রতিও কোন ধরনের রাগ অভিমান নেই, তোমারা ভালো থাকো এই কামনা করি।

আরও পড়ুন: