নিজের সন্তানকে নিজেই সমাজে অস্বীকৃতি

নানান তালবাহানা করে সময়ক্ষেপণ, ২০০ দিনের অনশন

২০০৫ সালে এনটিআরসিএ প্রতিষ্ঠার পর থেকে শিক্ষকদের নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে বারবার বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। ২০০৬ সালে অনুষ্ঠিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর ১৫,০০০ জন যোগ্য শিক্ষককে নিয়োগ না দেওয়ার অযুহাতে হতাশায় ডুবেছে পুরো বঞ্চিত নিবন্ধন সনদধারীরা। এই পরিস্থিতিতে বঞ্চিত নিবন্ধন সনদধারীরা তাদের দাবি আদায়ের জন্য আন্দোলন শুরু করেছে।

নিয়োগ প্রক্রিয়ার ওপর গভীর অসন্তোষ প্রকাশ করে তারা জানান, ১ম ও ৩য় গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করা শিক্ষকদের যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ প্রাপ্তি অস্বীকার করা হয়েছে। তারা মনে করছেন, ৩৫+ বয়সীদের নিয়োগে নিষেধাজ্ঞা সুপ্রিম কোর্টের রায়ের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এ প্রসঙ্গে তারা বলেন, “এনটিআরসিএ কর্তৃপক্ষের কাছে প্রশ্ন, যোগ্যতার প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও কেন শিক্ষকদের অবহেলা করা হচ্ছে?”

বঞ্চিত শিক্ষকরা অভিযোগ করেছেন, এনটিআরসিএতে ৬০,০০০ জনের অধিক জাল নিবন্ধন সনদধারী চাকরি পেয়েছেন, অথচ তারা যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও নিয়োগের জন্য হীন অবস্থায় রয়েছেন। তারা প্রশ্ন তুলেছেন, “অন্যের রাজনৈতিক সুবিধা ও অর্থের বিনিময়ে কেন তারা বৈধ সনদধারীরা বঞ্চিত হচ্ছেন?”

শিক্ষকদের অভাবনীয় এই পরিস্থিতিতে তারা ৬ দফা দাবি পেশ করেছেন:

১. **১ম – ১২তম সনদধারীদের আগে নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে।**
২. **নিয়োগে অনিয়মের তদন্ত করতে হবে।**
৩. **বৈধ সনদ প্রাপ্তির দিন থেকে চাকরির সুযোগ-সুবিধা প্রদান করতে হবে।**
৪. **অবৈধ সনদধারীদের চাকরিচ্যুতিসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।**
৫. **বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠন করতে হবে।**
৬. **আইন ও সুপ্রিম কোর্টের আপীল বিভাগের রায় বাস্তবায়ন করতে হবে।**
শিক্ষকদের নিয়োগে ন্যায্যতার দাবিতে ৬ দফা দাবি জানিয়েছে বঞ্চিত নিবন্ধন সনদধারীরা

এই দাবিগুলোর প্রতি সরকারের কার্যকর পদক্ষেপ আশা করে শিক্ষক সমাজ বলেন, “মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা সদয় দৃষ্টি কামনা করছি, যেন তারা আমাদের বেঁচে থাকার পথকে সুগম করতে এগিয়ে আসেন।”

শিক্ষকদের এই আন্দোলন জাতির বিবেককে জাগ্রত করার চেষ্টা, যাতে অবশেষে তাদের দাবি এবং অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়।

জি. এম. ইয়াছিন ।
(এমফিল ইবি । পিএইচডি গবেষক)
–সংকলিতঃপরিমার্জিত–